স্বাধীনতা

 

(কোভিড মুক্ত)স্বাধীনতা মানে……….

স্বাধীনতা দিবস ছোটবেলা, সকালবেলা, পতাকাতোলা, ফুলেরমালা,হেডস্যারের কিছু বলা, এন সি সির কদমতল আর লজেন্সবিস্কুট। মনে পড়ে। এই দিনই বিভাস জেনেছিল আজ ঋষি আরবিন্দের জন্মদিন। বারুদের গন্ধ থেকে ধূপের গন্ধ হ’য়ে ওঠার গল্প। বারুদের গন্ধ বিভাসের জীবনে আসেনি। ধূপের গন্ধেই জীবন ভ’রে আছে। ইংরেজী ট্রানস্লেসান,সুদ কসার অঙ্ক বুঝতে বুঝতেই কৈশোর হারিয়েছে। সেখানে স্বাধীনতা কোথায়? তাই সব কিছু না বুঝতে বুঝতেই সব বোঝা। লোককে বোঝাতেও ছাড়েনি, মন্ত্রী-আমাদের মতোই একজন নাগরিক। প্রধান- আমারই গ্রামের লোক। ভোটই আমাদের পবিত্র হাতিয়ার ইত্যেকার সব জনগনতান্ত্রিক চিন্তাভাবনাতেই সে বেশ দড়।

ইসমিতারা। শিক্ষিতা।স্বাধীন। বিভাসরা ভালোবেসেছিল। কিন্তু পথে ঘাটে এমন চোখরাঙানি…….পায়েল,বাবা মা’র কালচার তাকে স্বাবলম্বী করেছে। প্রায় একক চেষ্টায় ক্রেশ চালায়। পারিবারিক স্ট্যাটাসের গোপন লালন নেই। বিভাসরা একসঙ্গে থাকে। কোনও প্রবলেম নেই। আজ স্বাধীনতা দিবস। বিভাসের মনে হয় তিন্নি, বাচ্চু নিশ্চয় সকালবেলা-পতাকাতোলা-ফুলেরমালায় আছে। বিভাসের বাবার ইচ্ছেতেই যে যার স্বাধীন জায়গা বেছে নিয়েছে দাদারা। পাঁচজন, পাঁচটা সংসার।

‘সাদিনোতা বইলে এমন হাঁক পাড়লে যে, বুকির মধ্যিটা এক্কেরে ধড়াস কইরে ওঠেছেল।‘

না,বিভাসকে ক্ষেতু বাগদির মতো ধাক্কা দেয়নি স্বাধীনতা। বরং বুকটা কেমন হালকা ক’রে দিয়েছিল। বিভাস বুঝেছিল, সে স্বাধীন। এই দিনটাতে একটা ফেসটিভ আমেজ থাকে,যদিও কাজে বেরোতে হয়। নামি কোম্পানি,বাজার আছে। গ্রাম মফস্বলেও টার্গেট ফুলফিলড হচ্ছে। কোম্পানির ব্যবসার স্বার্থে স্থানীয় মানুষজনকে ভেটের ব্যবস্থাও করতে হয়। ছোটো খাটো রাজনীতিও সামলাতে হয়। তাতে বেশ বোঝা যায়, গ্রামের মানুষও স্বাধীনতার মানে খুঁজে পেয়েছে। এই যে সারাদিন ঘোরাঘুরি তারপর খুশিমতো বার কাফে পার্ক আরও কত, কোনও কৈফিয়ত নেই। পায়েলও না। এই যে এখন সন্ধে…..মিলি তুই?

কাকু?

এখানে কোথায় এসেছিস?

এই রূপ,রূপের সঙ্গে একটা কাজে...

তোর বাড়িতে চিন্তা করবে না? বৌদি চিন্তা করবে না?

আমার মাঝে মাঝে দেরী হয় মা জানে।

বড়দার আজ ছুটি?

বাবাতো দি ল ল লী।

তোর কি শরীর খারাপ?

না  তো , রূপের শরীরটা খারাপ......ডিসপেনসারিতে গিয়েছিলাম।ওঃ রূপ, আমার বন্ধু।

আচ্ছা,এখন বাড়ি যাচ্ছিস তো? রাত্রি বেলা, অনেকটা রাস্তা,আমি ট্যাক্সি ধ’রে দিচ্ছি,বাড়ি চলে যা।

ছেলেমানুষি কোর না কাকু,তুমি এত এক্সাইটেট হ’চ্ছ কেন?

তুমি আমার ভাইঝি তাই!

আমা র একবার ভোট দেওয়া হ’য়ে গে ছে কাকু, সামনের টার্মে আবার দে ব।

পরিস্থিতিটা বিভাসের কাছে কেমন নাটুকে ম’নে হ’চ্ছে.........

‘গণতন্ত্রকে আমি চিনি না বাবু,কুথায় থাকেন তাও জানি না।

চোপ শালা! ন্যাকা চৈতন!’

গোপাল কাহার আজ লেড দেখে,এ্যান্ড্রয়েড রাখে,ধর্মের স্বাধীনতা বোঝে,একা হাতে পঞ্চায়েত-কন্ট্রাকট্রার সব সামলাতে পারে,বিরোধীর সমালোচনায় গলা ফাটাতে পারে। সব চেয়ে বড় কথা ভোটটা বোঝে......তার মানে স্বাধীনতাটাও বোঝে,গনতন্ত্রটাও বোঝে,তাই সারা বিশ্বের সঙ্গে সেও গলা মেলায়,’’জয় হো’’

--------------

 

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

দুর্গাপুজোর সাত কাহন

আলয়

এসপার-ওসপার